মেক্সিকোর কবিতা
কোরাল ব্রাকোর দুটি কবিতা
১. Firefly under the Tongue (জিভের তলায় জোনাকি)
ইংরেজি অনুবাদঃ ফরেস্ট গ্যান্ডার
বাংলা অনুবাদঃ শ্যামশ্রী রায় কর্মকার
গেঁজে যাওয়ার তীব্র স্বাদ থেকে ভালবাসি তোমাকে
স্বর্গীয় মণ্ডের মধ্যে, সদ্যোজাত, পতঙ্গ, নীল
বিশুদ্ধ রসের মধ্যে, উজ্জ্বল এবং নমনীয়
কান্না, যা আলোকে শুদ্ধ করে তোলে
ফল গাছের ফাটলের মধ্যে;
শ্যাওলা প্রবণ জলে ছায়ার শরীরে লেপ্টে থাকতে থাকতে, মনোহর
গুহা, কোরক।
গুল্মজাতীয় রঙে বিন্দু বিন্দু মিশে যেতে যেতে, হতবাক স্পর্শ থেকে,
আভা
উঠে আসছে, তেতো মিঠে, ভয়ংকর সুখের,
স্পন্দনের ভেতর দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
কব্জা
(রাতের অলৌকিকে মোড়ানো, হিংস্র চিৎকারে,
বিশুদ্ধ, বালক, নরম হয়ে আসা জিভের
শেষ আকাঙ্ক্ষা দিয়ে, ছুঁয়ে দিচ্ছে
মসৃণ, অস্থায়ী, পিচ্ছিল- শিলার মধ্যে
ভাঁজ হয়ে থাকা সংবেদী ফুল দিয়ে
যদি সে কলঙ্ক আঁচ করে, আলোর আকুতি- সারমর্ম, মিলন
বিশুদ্ধ ও স্পন্দনশীল- পাপড়ির আনন্দের গভীরে, স্ফীত- [অর্ধেক আবৃত
মৃদু গতিশীল ; বৃন্ত], অ্যাসিড
মসৃণ তরল [ঠাণ্ডা], নোনা জলাভূমি,
স্বাদু সেই তরল [ঈশ্বরকে চেনার সেতু], জোনাকির মধু।)
২.Water of Jellyfish (জেলিফিশের জল)
ইংরেজি অনুবাদঃ টম বল
বাংলা অনুবাদঃ শ্যামশ্রী রায় কর্মকার
জেলিফিশের জল
দুধসাদা, নিরন্তর আকৃতি বদলে ফেলা
সর্পিল জল, ঝলমলে জলজ মাংস, গলে যাচ্ছে
অপূর্ব পারিপার্শ্বিকে। জল- সুস্বাদু জল
পশ্চাদ্বর্তী, দুর্বল
এবং প্রশান্তিতে স্তরীভূত। জল
রেশমি, ঘোরবর্ণ, সীসার মতো ঘন জল – পারদীয়
স্বাধীনভাবে ভেসে যাচ্ছে, অলস গতিতে। সমুদ্র-আগাছাগুলো সেখানে, ঝলমল করছে,
আনন্দের বুকের ওপরে। সমুদ্র-আগাছা,
শিখিপাখা জুড়ে দিচ্ছে একেকটি বুদ্বুদে
– নৈঃশব্দের ঝুলন্ত খিলানের ওপর, ব্যাসল্ট শিলার
দীর্ঘ শলাকার ওপর; জলজ আগাছা, তার পরিচিত সোহাগ-আদর,
তার নম্র প্রবাহ। আলোর জল, মাছের; হাওয়া,
আলো উপচে পড়া অ্যাগেট পাথর। লাজুক হরিণ দপদপ করে উঠছে আগুনের শিখার মতো-
শ্বেত-শিমুল গাছের ভেতর দিয়ে, ছোট ছোট মাছের ঝাঁকের ভেতর দিয়ে
আগুন ধুকধুক করছে,
জল চুপিচুপি যাচ্ছে, বনবিড়ালের মতো; বিম মাছের জল (জাফ্রং পাথরের
আকস্মিক লাল ও বাদামি)। এই জেলিফিশ সেজে থাকা মেডুসাদের মাঝখানে
তার কী মহিমা।
উপকূল রেখার ফাঁক হয়ে থাকা দুটি ঠোঁট, হাওয়ার নরম
চলাচল, পেলব ঘুমিয়ে থাকা, স্ফটিকের মধ্যে থিতু হওয়া, উভচর
পিছল করা – জল, রেশমি এবং
চুম্বকীয়; সাম্যবান। জল, উপকূল ঘেঁষে যাচ্ছে – কামনাপ্রবণ আলো
জলের মধ্যে হাঁটছে, তৈলাক্ত
ঝুরঝুরে ব্যাসল্ট। আলো হামাগুড়ি দিচ্ছে, রং নিয়ে খেলতে খেলতে
নিজের ভেতরকার আগুনের মধ্যে দিয়ে। – জেলিফিশের
জল।
মিষ্টি তাজা- জল ঝিলমিল করে।
দাগ না রেখে যাওয়া জল; ঘন,
পারদীয়
ইস্পাতের মত সাদা, গ্রানাইটের গাদার মধ্যে দিয়ে ঘুরে ঘুরে চলে যাওয়া, তার ছোট ছোট মাছের ঝলক দেখিয়ে যাওয়া, গোপন, মসৃণ
জীবন্ত জল,
এবং গড়িয়ে যাচ্ছে; ব্রোঞ্জ রঙের সূর্য লাফ দিয়ে চলে আসছে কাছে;
-তরল খনিজ, ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসছে। জেলিফিশের জল, জল
যে নিজের মধ্যে নিজের মিলিয়ে যাওয়া অনুভব করে
নীল পিছলের মধ্যে, তিরতির করা মৌচাক। দীর্ঘ
জলরেখা, সমুদ্র-লেটুস, শিঙিমাছ খুঁটে খাচ্ছে
তার প্লাবিত শয্যার সম্পদ, যার মৃদু অমৃত গড়ে তুলছে সোনালী সায়র, রূপান্তরশীল চৌকাঠ। পালক-ভারের জল,
অ্যাম্বার-গর্ভের বাতাস,
আলোর পবিত্র তেল, মোহময়, ধৌত ছায়ার নিচে,
বাঘের উজান। প্রান্তিক জল, বাণ মাছ,
নিজেই নিজেকে গ্রাস করে ফেলছে,
রাতে তার অনন্য যাত্রা-
খনিজের রেশম গর্ভের পাশ দিয়ে, সমুদ্র-সাধকের পাশ দিয়ে, সামুদ্রিক মাছে ভরা
জল। ভারী জল (সেই প্রশান্ত উল্লাস,
উষ্ণ; যেভাবে ঝলমল করে)-
জলের ধার –
তার মসৃণ বদলে যাওয়া, নিজের মধ্যে বুঁদ হয়ে থাকা আনন্দ,
নিজেকে মোহিত করা উত্থান-পতন, জল,
রেশমি, পিছিয়ে যাওয়া, স্তরে স্তরে
গড়ে তোলা অবসন্ন সুধীর। জল, জল,
তার নরম ঝাপটা
– উদবিড়ালের জল, এবং মাছের। জেলিফিশের
জল,
দুধসাদা, সর্পিল; জল,