শুভঙ্কর দাস (Suvankar Das)
জন্ম: ১৯৭৯, শিক্ষা: এম.এ, বি. এড, পেশা: শিক্ষকতা, কবিতা-গল্প-সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৭।
গুপ্তনিবাস
বৃষ্টিভেজা ভোর আসে ঠিক মণীন্দ্র গুপ্তের কবিতার মতো,
আমি কাব্যের পাতাটি জড়িয়ে বেরিয়ে পড়ি
সেইসব রৌদ্রের বাড়ি
যাদের সঙ্গে কবিতার অর্থ নিয়ে হয়েছিল এক জন্ম মতান্তর!
প্রিয় লাল স্কুলবাড়ি,বলতে পারো কোথায় আমার ঘর?
এই ছন্দ, আসলে আমার ভেতরে প্রেম।
এই অলংকার, আসলে আমার অমুদ্রিত কাম।
এই উপমা,আমারই সংযম-সন্ন্যাসের যাত্রাবদল।
কিন্তু কবিতা কোনো ছন্দ, অলংকার অথবা উপমা রাখব না,
শুধু বাগধারার মতো কিছু পোকা কাটতে থাকবে সাদা কাগজ
যাতে প্রতিটি শব্দের অর্থ ছবি হয়ে ফুটে ওঠে
তৃষ্ণার জলের মতো
যে জলে পালক ডুবিয়ে কবিতা লিখতেন মণীন্দ্র গুপ্ত।
তৃতীয় নয়ন
আগুনের অনেককাল আগে একটি জলের শরীর
তটের কাছে এসে স্থির।
আকাশে লালনের রঙ।প্রতিটি মেঘ নৌকা।একটি
বটবৃক্ষ গৃহের মতো ছায়া।প্রতিটি মৎস সত্ত্ব-রজ-তমকে
ঢেউ-এ ভাসিয়ে চির রোদ্দুর।
ঠিক সেই সময় এক সবুজ-সরল গ্রাম,
দীঘল-কোমরে কলসি আর মুখে তার প্রথম বৃষ্টির রঙ,
যেই জলে রেখেছে স্পর্শ
প্রতিটি ক্রিয়াপদ হয়ে গেল গভীর গোপন,
যার আগুনে প্রতিটি নয়ন পুড়ে যায় না
নির্মিত হয়।
মহাযজ্ঞ
১
এইমাত্র যজ্ঞ শেষ হল,আগুনের অশ্ব
ছুটে গেল স্বর্গের দিকে
জন্মান্তর প্রার্থনায় বড় ফিকে
পড়ে রইল মনের মাংস,কিছু প্রতিবাদ বশ্য
বৃষ্টি নামে শেষে এক বসুন্ধরা ঝেঁপে
আয় তো অন্ধকার, বুকের আলো দেবো মেপে!
২
এবার শান্ত হল,কুরুক্ষেত্র, দৃশ্যত অশ্রুময়
কোনো দেবতার মন্ত্র উচ্চারণ নয়
রক্তমাংসের খুদকুঁড়া আনবে জয়
নক্ষত্রের মতো নেমে আসে ভিটেমাটি, অক্ষয়
এবার মানুষের সংজ্ঞায় মানুষ দাঁড়াবে সিংহাসন
ইঁদুরের ঠোঁটে চাঁদ, জোনাকি নক্ষত্র হতে উড়ছে আমরণ!
৩
এইবারে প্রতিটি হাত করে দাও নিরস্ত্র, শুধু ফুল
জন্মের কোনো মহাভারত হবে না, রক্তের ভুল!
বলো শান্তি,এসো শান্তি,হয়ে ওঠা শান্তি, অতুল।