সোমনাথ রায় (Somnath Roy)
ভদ্দরলোকের বাচ্চা (ভাম)
একচল্লিশ ডিগ্রি তাপ-প্রবাহ ডিঙিয়ে বাড়ি ফিরলে
হাট করে খোলা জানলা দিয়ে ঢোকা প্রখর রোদ্দুরে
ঝলসানো ঘরখানা মুচকি হেসে সিলিং-এর পাখা ঘুরিয়ে দিয়েছে
মনে হচ্ছে, কাবাব হওয়ার দোর গোঁড়ায় পৌঁছেছি।
ভাত ঢাকা দেওয়া আছে খাবার টেবিলে।
আহা, খিদে আর একটু চড়লেও গা-মাথা ভিজিয়ে আসায় ভালো
ছাদের পিভিসি ট্যাংকে এখন চায়ের পাতা দিলে
তোমার স্নানের আগে এক-ঢোঁক চায়ের আহ্লাদ মিটে যেত।
বাথরুমের গামলা-বালতি ঠাণ্ডা জলে ভরা থাকলে খুশি হতে?
ওফ্, আদেখলাপনার শেষ নেই দেখছি!
যাও, ঢুকে দ্যাখো, সব শুকিয়ে খট-খট করছে।
এতে ক্ষোভ করো না, মা সারদা-রামকৃষ্ণের কথার আবমাননা হবে—
“কখনও অন্যের দোষ ধরো না, নিজের দোষ দ্যাখো।”
তুমি দোতলায় এসি লাগিয়ে দিয়েছ।
আহা, তুমি কে? পড়োনি গীতাভাষ্য, শ্রীকৃষ্ণ উবাচ—
“প্রকৃতে ক্রিয়মনানি…”, হ্যাঁ, যার যা প্রাপ্য
বরং কুয়োতলায় দাঁড়িয়ে বেশ করে হিম-শীতল হয়ে এসো
তারপর সকালে রান্না হওয়া সবজি
দুপুরে না-ফোটানো মাছের ঝোল একটু টোকে গেলে
এই অবেলার খিদে সব ঠিক মানিয়ে হজম করে ফেলবে।
একটু চোঁয়া ঢেঁকুর উঠতেই পারে—
টু-শব্দ না-করে পেট ভরে জল খাও
প্রতিবেশি জানবে তুমি ভদ্দরলোকের বাচ্চা (ভাম)।
ভাবুকগে, যার যা ভাবনা। তোমার শর্করা
রক্তচাপ তোমাকেই কেবল সামলাতে হবে। বর্ষা
কবে আসবে ঠিক নেই, তোমার বর্ষাতি হয়ে আসবেও না
কাগজ কলম নিয়ে বেশ তো সূর্যাস্তে
বাতাসের পারদ কমিয়ে দিতে পারলে।
সাব্বাস, অক্ষরশিল্প যুগ যুগ জিও।