সঙ্গীতা গুন্ডেচা-র কবিতা

0
888
Sangeeta Gundecha

সঙ্গীতা গুন্ডেচা (Sangeeta Gundecha)

জন্ম: উজ্জ্বয়িনী, মধ্যপ্রদেশ।

সঙ্গীতা গুন্ডেচা

কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক এবং নাট্যশাস্ত্রজ্ঞ। ভোপাল কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী আচার্য। হিন্দি শিল্প, সাহিত্য এবং সভ্যতা কেন্দ্রিক পত্রিকা ‘সমাস’-এ সম্পাদনা সহযোগ। ভোপালে থাকেন।
সম্পर्क: ১৫ প্রফেসার্স কলোনি, ভোপাল-৪৬২০০২ (ম.প্র.)

 

অনুবাদ – অমৃতা বেরা

ছায়া

সখী! ঘাটে গিয়ে আমি
জলে কিছুক্ষণ বিলি কেটে
দেখি তার ছায়া
জলপদ্মের ওপর

পদ্ম কলস ছুঁয়ে
অনুভব করি গভীর অতলে
তার স্পর্শ, গোলাপী রঙ

বিন্দু বিন্দু জলে শরীর
জলবিন্দুতে প্রতিটি অঙ্গ
স্নান করিয়ে
করি আচমন

ঘাটে গিয়ে আমি
জলস্পর্শে কৃতাঞ্জলি দিই,
কিছুক্ষণ,
তারপর তাকাইনা আর
সে দিকে

অর্থ

আমি বলি ঘর
মানে দাঁড়ায় অন্য

আমি বলি প্রেম
মানে দাঁড়ায় অন্য

আমি আগুন বলি
মানে অন্য দাঁড়ায়

আমি বলি শব্দ
মানে অন্য দাঁড়ায়

সবই নাম।
তোমার নামে কল্পিত,
আমি বলি তুমি,
অর্থ সরে দাঁড়ায়

একই সাথে

আমি একই সাথে শহর ও গ্রাম
আমি পুঁতেছি বীজ
যার শিকড় ঝড়ে পড়ছে
আকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে,

আমি একই সাথে ঘুম, আবার স্বপ্ন,

আমার ডান পায়ের তলায়
বাঁধা রয়েছে একটি মুক্ত
যার, শ্বেত-অস্ব-আভা
বত্রিশ চোরকে করেছে চিরঅন্ধ

আমি সত্য এবং মিথ্যা,
বিরহ আমার বুক,
দু টুকরো কাগজের ভাঁজে
ভাগ হয়ে গেছে

আমি একই সাথে ভক্তি ও ঈশ্বর,
আমার প্রতিটি পদছাপে
অঙ্কিত তোমার চরণ

আমিই রয়েছি, আবার নেইও বটে

 

অবুঝ

ভোর সাড়ে পাঁচটায় গ্যাংটকের অতিথিগৃহে
ফোনের ঘড়িতে হঠাৎ
‘ওয়াক ইন দ্যা ফরেস্ট’ গানের সুরে
অ্যালার্ম বেজে ওঠে

রুমটেক বৌদ্ধ মঠে
ভুটান থেকে পড়তে আসা
গাঢ় খৈরি পোশাক পরা
তরুণ ভিক্ষু
নমস্কার করে

গানের চিকন শ্রুতির মত
কুঁচকানো মুখ মহিলা
চোখের পাতা আর ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
পনিরের সাথে পান করার জন্য অন্য কিছু লাগবে
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে
মদ জিজ্ঞেস করে ঘোরকে,
‘তুমি কি আছ বেঁচে?’

যে মরে সে মারা যাওয়ার আগে
লাফ দিয়ে ছুঁয়ে আসে
হাজারো ফুট উঁচু কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া

যে মারা যায় সে মরার আগে
প্রণাম করে
মহাত্মা বুদ্ধের ভূমিস্পর্শী ভঙ্গিকে

যে মরে সে মারা যাওয়ার আগে
তিস্তার সবুজ জলে খোঁজে
ডুবে থাকা গোলাকার পাথর

 

পারিজাতের ফুল

ভরা রোদে একটি পাতা পড়ে
হ্রদের জলে
কেঁপে ওঠে তার শরীর
বাক্য থেকে দুর বয়ে যায়;
তোমার নামের প্রথম
অক্ষর

আমি সবসময়ই ষোড়শী থাকবো
কারণ তুমি জ্ঞানী
সে জিজ্ঞাসা করে:
তুমি কি আমার কোল ভরিয়ে দেবে লাল ডালিয়া ফুলে!

সে ভাবলো, ভাবতে থাকলো
বলল: তুমি গাছের ডাল হয়ে ওঠো
আমি একে-একে সাজাব সবকটা বনফুল

সময়ের গাছ থেকে
পারিজাতের ফুলের মতো ঝরে যায়:
কাহিনী
কখনও তাদের সুগন্ধিতে
সুবাসিত হয়ে ওঠে:
শব্দ