সমরেশ মুখোপাধ্যায়
জন্ম সত্তর দশকের প্রথমার্ধে। শিক্ষা ইংরেজি সাহিত্যে এম এ। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শুকতারা পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ শামুকজন্ম। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ -বিষণ্ণ দাবার কোর্ট, তোমার ইঙ্গিত বুঝি, পুর্বপুরুষের ছায়া, নক্ষত্রবাড়ি, খাদের কিনারে একা। ২০১৫ সালে বনলতা পুরস্কার, ২০১৬ সালে অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, ২০১৭ সালে নতুন কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন।
দীপাবলির দিকে
ক্রমশ একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে
চলে যাচ্ছি…
সবকিছু কেমন ঘোটালে আক্রমণাত্মক
বাঘকে মনে হচ্ছে শিয়াল
আর হাতিকে কেমন হায় না
এরকম একটা অরণ্যের মধ্যে
শাল গাছ ভেবে জড়িয়ে ধরছি
শিমূল গাছের কাঁটা
আর হেলে সাপটাও কেমন
কিংকোবরার মতো ছোবল তুলে
দাঁড়াল
এখন এই মেঘ মাখা শরীর
এই বৃষ্টি ভেজা আকাঙ্ক্ষা
সমুদ্রের ঢেউয়ের মধ্যে ছুঁড়ে
ফেলতে গিয়ে
দেখি
একটা সুগভীর গর্তের মধ্যে
পুঁতে যাচ্ছে আমার গ্রীষ্ম বর্ষা হেমন্ত
সব চতুর্দশী অমাবষ্যা পূর্ণিমা…
ক্রমশ একটা গর্ত রশিদ খানের গানের
মতো নেমে আসছে আমার মাথায়…
আমি হাততালি দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছি
দীপাবলির দিকে….
এমন রাম চাই না
এমন রাম চাই না
যারা মানুষ খুন করে
এমন রাম চাই না
যাকে লাগেনা দরকারে।
বিভেদ আর বিষাদ যেন
ঘিরেছে সারা দেশ
নদীর মতো বইছে শুধু
ঘৃণা ও বিদ্বেষ!
হিংসা থেকে হিংসা হয়
রক্ত ওঠে কেঁপে…
বৃষ্টি আসে বৃষ্টি যায়
বৃষ্টি পড়ে ঝেঁপে…
এত যে জল চোখের জল
আতঙ্ক আর চিতা
আমার দেশ চায় না
এমন হিংস্র রাম সীতা!
যা হচ্ছে
পারছি না, ক্রমশ ঝুঁকে পড়ছি
হাওয়ার দিকে জলের দিকে
গাছ কিংবা নদীর দিকে…
যেতে যেতে স্পষ্ট হচ্ছে রাস্তা…
অরণ্যকে ঘিরে রেখেছে রহস্য
ক্রমশ তাদের আবিষ্কার করতে করতে
যাব
তাই এই চায়ের দোকানে এসে বসা
অথচ প্রতিদিন
আহত আর অস্বাভাবিক লাগছে সবকিছু
গোটা আরণ্যটাই উঠে এসেছে পিঠে
চিতা বাঘ আর হরিণের দৌড়াদৌড়ি
টের পাচ্ছি মুর্হূমুর্হূ
এনকাউন্টার করতে করতে ছুটে আসছে
পুলিশ…
এই যুদ্ধক্ষেত্রে কোনও ফুলের বাগান নেই
কোনও শিশুর হাসি নেই
যা হচ্ছে
সব ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপে
টুইটারে আর টিকটকে!