মনোনীতা চক্রবর্তীর কবিতা

0
283
Mananeeta Chakrabarty

মনোনীতা চক্রবর্তী (Mananeeta Chakrabarty)

এখনও সৃষ্টি হইনি

বাগানের বুলবুল, আমার আকাঙ্ক্ষিত পৃষ্ঠারা, আমার আত্মা এক পঙক্তিতে ঘাসের নিচে শুয়ে আছে।
ওপরে নরম সবুজ ঘাস, যেন সবুজ কার্পেট।
ঘিরে থাকা প্রাচীন শিল্পের চিত্রিত দেওয়াল সেজে আছে উজ্জ্বল। প্রাণবন্ত। ছড়ার গান।
পুকুর পাড়ে আর পুতুলের বিয়ের জলভরা প্রহর নেই। দণ্ডকলস নেই। ফুলের মধু টেনে নেওয়ার কেউ নেই। সন্ধ্যামালতি, গন্ধরাজ নেই। মধুমালতি নেই।
কুমারী-দুপুর, কিশোরী – বিনুনি, চঞ্চল দুটি পা নেই
রান্নাবাটি খেলার কাঁটা গাছের সেই হলুদ ফুলের পাপড়ির পাপড় ভাজা নেই। রথের মেলার মাটির বাসন নেই। নীল স্কার্ট, হোয়াইট শার্ট , স্কুল ব্যাগ নেই। বাবা নেই।
কেউ কোত্থাও নেই। খুঁজছি কেবল…
অসংখ্য আত্মা – প্রেতাত্মার অলৌকিক মায়াভ্রমণে শরিক
এ – আমি কোথাও কিচ্ছুটি খুঁজে পেলাম না।

রিভার্স গিয়ারে গাড়ির চাকা

ঘর হারানো সেই কবেই;
এবারে ঘরটাও সেখানে নেই…
ঘরের ওপর সবুজ ঘাস, ঘাসের গালিচা
একটিও ঘাসফুল নেই কোত্থাও
দুধেআলতা সবুজের একটা ঘন মায়া থাকে; ঘোর থাকে…

নিজের সমাধির ওপর স্পর্শের বিবিধ;
নিজের চোখের জল রেখে আসা
এই-বা কম কীসে…

গাড়িটা সন্ধের আধোআলোয় হেডলাইট জ্বালিয়ে
এগিয়ে এল। করা যেন আঁচল টেনে ধরছে;

আঁচল?
দেহহীনের আবার আঁচল কীসের…

 

মনোলগ

প্রণয়সংগীত থেমে গেলে হাঁটুমুড়ে বসে যে -আলো,
তাকে ভুল গান বলে দাগিয়ে দেওয়া মহাপাপ!
অংশত নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া দেওয়ালেও
ফুল ফোটে হামেশা অজান্তেই,
সেখানেই সে থাকে বহাল তবিয়তে।
অমলিন বাঁক ঝুলছে বটের ঝুড়িতে।
হয়তো প্রাজ্ঞ – বৃক্ষ জানে সেই অস্পষ্ট যা-কিছু।
জানে শাখাপ্রশাখা…অনভিজ্ঞ সময় মুছেছে
পবিত্র মাটির উল্লেখযোগ্য স্মৃতিসমূহ।
তারপরও অগণিত আলো থাকে সেখানেই।
হৃদয়ের সর্বনামে থাকে জলের বানান।
পাটভাঙা পাহাড় ও চা-বন পেরিয়ে নদী দেখে সেসব।
প্র্ণয়সংগীত এক দুরন্ত কনফেশন
একঝাঁক উত্তপ্ত মনোলগ
ফিয়ারলেস ফ্রক; উচ্ছন্ন ভরাট সেলাই
মায়ের আদর, বাবার অপেক্ষা

এসব পেরিয়ে যাওয়ার পরও বেঁচে থাকে
আরও এক অপেক্ষার সমবেত গান…

প্রণয়সংগীত থেমে গেলেও সুরের পুনর্নির্মাণ হয়;
গান হয়। লয় – ছন্দ থাকে;
শুধু সম ফাঁকের এক ভয়াবহ জট পাকিয়ে যায়..

তাকে ‘ভুল গান ‘ বলা যায় না অন্তত