দেবাশিস-এর কবিতা

0
642
Debasish Saha

দেবাশিস সাহা (Debasish Saha), থাকেন কৃষ্ণনগরে। প্রকাশিত একমাত্র কবিতার বই ‘সর্বভূতেষু’। পেশায় শিক্ষক।

একা আর নির্জনবাস

আমাদের দু’জনা মিলে সুন্দর নির্জনবাস
একাকী পিঙ্গলরঙা দোআঁশের ঢিলেমি
মাটির শিকড়ে বাড়ে মৃত ফরাসের অবকাশ
সবই তো দিয়েছ মুছে হে ঈশ্বর হে অন্তর্যামী!

পরজীবী মিথোজীবী অথবা পদস্থল জোড়া
ভেসে গেছে মহাপ্রলয়ে নোয়ার নৌকায়
সপ্ত ঋষির ন্যায় বেঁচে থাকে যতটুকু প্রাণভোমরা
কালোরক্ত বয়ে যায় আমাদের শিরায় শিরায়।

আলোকবর্ষ দৈর্ঘ্যে বারে পাশাপাশি তুমি আর আমি
বয়েসের হিসেব কষা ভুল হয় ভুল হয় বড়
কিভাবে মুছবে তুমি ছায়াপথ বলিরেখা বল অন্তর্যামী?
দিনের অন্ধকারে আলোকেই খুঁজে ফিরি একা জড়সড়।

আমাদের জীবৎকাল শূন্যেরই গুণিতকে লেখা
তবুও তোমার কাছে জমা রেখে দেব এই ইহকাল
ফেরৎ পাব না জানি তবুও কখনও যদি পাই দেখা
জানিও অন্তর্যামী ধুয়ে রেখ আমাদের পরকাল।

আমাদের দু’জনা মিলে এক সুন্দর নির্জনবাস
স্বর্গের সীমানা ধরে বরাবর আড়াআড়ি থাকা
লিখিত রয়েছে সেসব অজ্ঞাতযোগে ইতিহাস
চিৎকার করে বলি শোন- আমি একা আমি একা আমি একা।

 

শালিক সঙ্গ

ওরা ছিল ওদের মত, খেলছিল
বিস্কুটগুড়ো ছড়িয়ে দিলাম পাশে
শুরু হলো মারামারি, ভীষণ ভাবে
পারলে খায় আমাকেও, গোগ্রাসে

সাঁইত্রিশটা শালিকের ধারালো ঠোঁটের চাপে
আমার যন্ত্রণাগুলো মরে যায় চুপচাপ
সাঁইত্রিশটা শালিকের ক্ষুধার্ত চোখের দিকে
আধমরা মানুষের মৃত্যুঘণ্টা বাজে

তাহলে দাঁড়াল কি? পাখিকুল
সারাক্ষণ চিৎকার কোলাহল বড়
খাবারের লোভে সব ভুলে গেল দোষ
আমার খিদের মন করে আফসোস

এরকমই খিদে গুলো চারপাশে ভিড় করে
ঝাঁকে ঝাঁকে শালিকের জোড়া জোড়া নখ
নখের আঁচড়ে আঁকা আমাদের বিভাজিত দেশকাল
হাতের আঙ্গুল গুলো শালিকের চোখ ঢেকে দেয়

আমাদের চিরকাল কথা বলা ম্রিয়মাণ চাহিদা
আমাদের উচ্ছিষ্ট পাতে শত শত শালিকের চোখ
রেখে দিই, ঢেকে রাখি, অন্ধকার কুঠুরির কোণে
খানিক লজ্জা পাই, পড়ে থাকে শুধু বীতশোক