আলো আর বৃষ্টি জড়াল
ছবিটা সরিয়ে নিলে একটা ফুলদানি হতে পারে
আলোফুল ...
সঙ্গমের সিনে দেখেছি
ক্যামেরার লেন্স আউট অফ ফ্রেম হয়ে যায়
এখনও এত কার্পণ্য
মোমবাতি নিভে যায়,কোথাওবা টিকটিকির আরশোলার শিকার ধরা।
অধ্যাপক মানেই চোখে তার ভারী ফ্রেমের চশমা
দেখেছি,স্কুলে ঢোকার আগে দিদিমণিকে নাকের নোলক
খুলে রাখতে মিনি পার্সে।
এখনো এই ধারণা রয়ে যায় আমাদের বৃহত্তর জীবনে
ভাবতে ভাবতে রক্তকরবী পড়া শেষ হয়ে গেল
খামাকা রঞ্জনকে মারলেন কেন?
অতৃপ্ত সঙ্গম শেষে...
কথা বেড়ে দিচ্ছে স্ত্রী
বেকার স্বামীর থালায়
এমন রেসিপির বিকল্প কিছু নেই
বনের শেয়াল, শহরের নেড়িকুত্তা
সকলে বুঝতে পারছে
আজ কবি-র বাড়িতে রান্না হচ্ছে প্রেম
বড় মুখ করে বললে, সংসারই চলে না
এবার কবিতাটা ছাড়ো
ভিতরটা তোলপাড় করে দিলে
এতদিনের সখ্যটা নিজে-নিজেই খেলে
তোমাকে বোঝানোর ভাষাই নেই
কবিতা নেশাও নয়, কবিতা পেশাও নয়
কবিতার জন্যে মই বাইতে হয় না
কবিতার জন্যে আকাশেও উড়তে হয় না
মাটিতেও টলতে হয় না
আমার সংসার আর কবিতা মাখামাখি
ওরা সহাবস্থান জানে, ওরা রাগ-অনুরাগ জানে
ওরা জানে কবিতা সম্রাটের
আর একটু...
১
নীরবতার ভেতর লাল নীল সাদা
পতাকা মিছিল করে। ওড়ে । গান গায়
ঘাসে ঘাসে জলবিন্দু বৃষ্টি হয়ে ঝরে
কাচের ও পিঠে বসে থাকে
কোজাগরী চাঁদ...কে মোহ, কে ভালবাসা?
ধূলায় যে সব অন্ধকার !
২
আলুথালু বারন্দায় ছড়ানো রয়েছে
ধানের শীষের আলপনা
পাশ দিয়ে হেঁটে গেছে চকিত সংসার
দূর থেকে মনে হয় যেন, গৃহিণীর অভিমান।
ঘরের মধ্যেও তাঁর ঘর নেই, লুপ্ত...
তোমার পিছুটানে লেগে আছে গাঢ় নিশীথ
তবু তুমি গোপনীয় বলে এঁকে ফেলেছো শরীরের মূর্ছনা
অথচ রোমাঞ্চ ভেঙে বহুজন্মের বিষাদ জেগে আছে,আজন্মকাল
কিন্তু সরোদের কম্পন এসব ঘটনায় ভোরের কুয়াশা, নন্দনতত্ত্ব
এবারে আমার মিশে যাওয়ার পালা
যেন অদূরে আলোর আভাস উদীয়মান সারাক্ষণ
এসেছি, প্রেম অতীত বলে তুলে দিই আদিগর্ভ স্পর্শ
সঙ্গে শেষ সমুদ্রস্নানে লেগে থাকা নিয়ন আলো
জীবনের সহজ...
ছেঁকেছুঁকে লিখেছি কত না –
মাতৃকুলের অপযশ হবে,সেই ভয়ে।
গর্ভের জল ভেঙে গেলে বলেছি,
কিছু না কিছু না!
ঘর পুড়ে গেলে সেই ধোঁয়া,পোড়া মাংসের ধোঁয়া,পাকিস্তানের দিকে উড়িয়ে দিয়েছি।
কেউ আর কানাকানি করেনি আমাকে নিয়ে!
সমাজ, সংসারে,যন্ত্রণায় মরে যেতে যেতে, সেয়ানার মতো,উৎস ঘুরিয়ে দিয়েছি ধর্মতলায়,যেখানে ধর্ণায় বসেছে নরনারী।
কখনও -বা,প্রেমিকের মিছিল চলেছে –
ওরা স্রেফ বন্ধু আমার, এইমতো...
কোন অনুতাপ বা অভিযোগ ছাড়াই
আমি এঁকে ফেলি চাঁদ, চুম্বন আর মরণাপন্ন বেহালা
তুলির টানে সম্পূর্ণ করি নদীর বাঁক, মন্দার বন
এই ক্যানভাস আর গৃহস্থালি আমি মেলাতে পারিনা
সমস্ত দিনের শেষে নোনাধরা দেয়াল, হয়তো বা
অনায়াসে ছেড়ে চলে যাই ভাঙনের শহর...
তোমারও কি মনে পড়ে পুরুষালি ভ্রমণকাহিনী
সূর্যাস্তের মুহূর্ত, গানের কলি, জৈব রসায়ন
রোদের নামতা, ছায়ার নামতা,...
রাতভর জলের ভিতরে ডুবে ডুবে যাই
খুলে যায় কত যে দরজা !
জলের দরজা বুঝি এরকম !
ডুবে যেতে যেতে কী যে ঘুম পায় !
আমি আগামীর কপাট খুলতে গিয়ে দেখি---
অবুঝ সুখেরা সব পেখম তুলেছে যেন অবিনশ্বর আলো
সে-আলোয় ভাসতে ভাসতে কত কিছু তুচ্ছ হয়ে যায় !
গাছের কোটরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা অতৃপ্তির ঘুণপোকা...
ঠেলা নিয়ে হাঁক দেয় যে নাঙা কাবাড়ি
তার সঙ্গে সাঙা হলে সুখে থাকা দায়
সূর্য জলে ধোয় পুন্না, রঙের খোঁয়ারি
ঝেড়েঝুড়ে ভোরবেলা আকাশে টাঙায়
সংসার সহজ বড়, সংসার কঠিন
কাবাড়ি যে কিনে ফেরে টুটাফুটা মন
বউটি ঝালাই জানে, অগ্নিদাহে সেঁকে
বিধিমতে সারানোর করে আয়োজন
পদ্মাসনোস্থিত যোগী, দেহপদ্ম নিয়ে
রোজ ভেসে থাকে কন্যা বিবাহের জলে
আশহর দুঃখ কাঁধে কেউ ঘরে...
অন্ধকার ছুঁয়ে ছুঁয়ে মনে মনে বারবার গঙ্গায় গিয়েছি...
ভোরবেলা অশ্রুটুকু তর্পণের ফুল
অচেনা আলোর মুখ জেগে ওঠে আকাশ গঙ্গায়
দেবী জাগে, মা প্রসীদ, ঝাঁকড়া এলোচুল
দশমহাবিদ্যা জাগে, নিধনপ্রহর শেষে
মাতৃরূপ জাগে!
নতুন আকাশ জাগে, হে শরৎ,
জেগে ওঠে পুলক ও প্রতিমা!
অন্ধকার ধুয়ে মুছে আলো আসে কল্পপারাবারে—
আলোর সমষ্টি থেকে
অশ্রুর অভূতপূর্ব সুর জাগে শ্রবণের পারে!
অতিব্যক্তিগত সেই সুর!
এই যে নিশঃব্দের ঘরে অজ্ঞাতবাস আমার
একথা আমি কাউকে বলিনি। আমার বাহির
আমার অন্তরের থেকে অনেক দূরে বসবাস করে।
তুমি আমার বাইরের মানুষটাকে ভালোবাসলে,
আমার অন্তরকে খুঁজে দেখলে না।
একটাই ক্ষীণ দুয়ার দিয়ে হাওয়া চলাচল করে,
একটাই দুয়ার ফিরে আসার, তুমি হাওয়ার কাছে
নিজেকে প্রশ্ন করো,
কেন অক্ষরের বিষ আমি পান করেছি।
কেনই বা আলেয়া ও অতি আলোর...
বুকের ভেতর জাহাজ ডুবেছে যত
নীরবতা নিয়ে মরে গেছি বহুবার,
আমার চোখেতে নালিশ ছিল না কোনো
হেরে যাওয়াটুকু মৃত্যুরই দাবিদার।
প্রশ্নতে ছিল অনেক চিহ্ন আঁকা
ঘেমেছে চশমা কমেছে জলের দাম,
চিরকুটে লেখা লোডশেডিং এর বুলি
প্রেম ভালোবাসা ভাঙনেরই সৎ নাম,
তাসের ভাগ্যে জোকার এসেছে হাতে
জবাব ছিল না, হাসিতেই জাদুঘর
কলব্রে-র থেকে নেমে আসে কোনো গাধা
পিঠে বাঁধা ছিল আপোসকালীন...
গায়ে মাটি বনের মধ্যে বুড়ো শরৎকাল
চারপাশে তার উড়ে বসল পাখির চতুষ্পাঠী
মহালয়ার গল্প শোনো এইখানে কৈলাস
রাত্রি-ভোরে উঠেছে সব বয়স্ক গাছেরা
তাই দেখে আজ জলের ধারা প্রথমে ডাকেনি
অথচ চাঁদ ফাটল যখন মেহগনির শাখে
জ্বরে কাঁপছে সবেমাত্র সন্তানসম্ভবা
রিকশাচালক রহিমচাচার স্কুল-পড়ুয়া মেয়ে
পাড়ায় হাসছে, বাড়ির লোকেও মেনে নেয়নি, তাই
আত্মহত্যা করতে এলো নদীর নীচু বাঁকে?
দৌড়ে গেল কাঠবিড়ালি...
১
আনারকলিকে ঘিরে গাথা হচ্ছে পাথর
সেলিমের কথা বলতে গিয়ে বারবার
ধরে আসছে বাবার গলা আর ঘুমের মধ্যে
তলানি হয়ে যেতে যেতে বাদশাহের নির্দেশ
মিশে গেল লতা মঙ্গেশকরের রেকর্ডে
২
ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে একে একে নেমে যাচ্ছে
বিষণ্ণ জোকারেরা
শীতে শাস্তি পাওয়া ছেলেদের কথা ভেবে
আর ফিরবে না তারা
শুধু মরচে পড়বে উৎসব
৩
শেষপর্যন্ত দ্বিচারিতাই থেকে যায়
বিশেষত এই পাখির উড়ে যাওয়া
সূর্যাস্তের...
দেবীপক্ষ, মায়ের বোধন---
তারপর,
সবাই বলল দেবী বিসর্জন--- এ তো বড় পুণ্যের!
আসলে,
লোকনিন্দা-সামাজিকতা হল মুখ্য-
গল্পের আড়ালে রয়েছে সাজানো গল্প--- সর্বংসহা দেবী সাজানোর!
পান থেকে চুন খসলো
বাজলো উলু ধ্বনি, শাখ আর বিসর্জনের বাদ্যি
মুহূর্ত অপেক্ষা, সব শান্ত
সব শব্দ পরিণত হল শবে
নীরব দর্শক দেখল--- আহা! আহা! বলে দেবীর পুণ্য বিসর্জনে দিল হাত তালি
তারপর ফিরে গেল যে যার...
তৃতীয় রঙের মতো শিশু বেড়ালেরা ঢুকে পড়েছিল বলে
তুমিও ছায়ার উল্টো দিকে বসে প্রত্যাশিত জমির দখলে
নেমে পড়তে গিয়ে দেখো গোল গোল থাবা ঢুকে গেল কোলে কাঁখে
এবং বেরালে নিয়ে সেই সব শিকারীর স্তনযন্ত্রণাকে
যাতনা মানে তো মুখে অচেনা স্বাদের আনাগোনা চলে আর
শ্রাবণ মাসের মধ্যে রেখে আসা ছোট ছোট পাগল পাহাড়
পাহাড়ের ফুল দোলে,...
শরতের হাওয়া বইতে শুরু করলেই
কাগজে কাগজে তার চিহ্ন ফুটে ওঠে
এ'দুয়ের মাঝে কোন মিল আছে বুঝি!
হয়তবা আছে,
ভোরের শিউলি ফোটে
মায়ের প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে
দীপাবলি পর্যন্ত ছবি তৈরি হয়ে যায়
কাগজপত্রে,
পুজো সংখ্যা কত কত
কবিতার ঝুরি, শব্দের বন্যা বয়ে যায়,
কে পড়ে? কারা?
নাকি পড়ে থাকে টেবিলে?
আমিত্বের বিজ্ঞাপন সংখ্যা গুনে নেয়
কটা হল!
কেউ কাউকে কি মনে...
আলোর মতো রাত্রি নামে, উপচে পড়ে ঘর,
স্বপ্ন জুড়ে জাগল কি মর্মর?
চাঁদের মতো হাঁড়ির ভিতর গান ধরেছেন তাপ,
খিদের ছায়া মারল এসে ঝাঁপ।
ঝাঁপ দিয়েছে হাজারো চোখ, ঝাঁপ দিয়েছে দেশ,
এক হাঁড়িতেই মস্তানি সব শেষ।
যুদ্ধ কেবল অন্ধকারের, যুদ্ধ কেবল নিজের।
যত হারজিত খিদের রক্তবীজে।
আলোর মতো রাত্রি নামে - পরনে রাজবেশ
হাঁড়ির ভেতর, জলের ভেতর ফুটছে...
আকাশ সংযত হয়ে নেমে এলো ছাদে
অপার মহিমা দেখি ছড়িয়ে রয়েছে
মহিমা শব্দের যত আলো
তাও এসে এখানে ছড়ালো...
শুধু ভাবি— জীবন কি ভরা শুধু বিষে
সামনের ভেজা কার্নিশে কনুই নামিয়ে রেখে
দূরান্তরে তাকিয়ে থাকার পর ভাবি
এখানে বাবার পাশে মা-ও যেন আছে
আকাশ রয়েছে তার কাছে৷