বৃষ্টি ও চাঁদের মাঝে
মোমবাতি জ্বেলে
মধ্য জুলাই আমার বুকে
শস্যবীজ রেখে গেছে কবে!
এমনই অন্ধকারে জলের রং
চিনিয়েছিল অস্ফুট ভ্রূণাধার।
সোঁদা মাটিতে স্নেহের গন্ধ শুঁকে
পৌঁছে গেছি কত অচিন পুকুর—
সেখানে সেই হাতের চপলতা নেই,
নেই কোনও শ্বাসের প্রলেপ
হে জুলাইয়ের জন্মবার
আমাকে নিয়ে চলো রোমকূপের বনে!
আদিম ঘাস যেখানে
লোকাতীত আলোর অপেক্ষায়
গর্ভের কলুষহীন মাঠও
আরেকবার নিশ্চুপ হতে চায়,
হাত ধরে বলে—
‘তৃষ্ণার্ত পারাপার...
তোমাকে লিখিনি আমি প্রেমের কবিতা একদিনও
ওয়েব সিরিজের মতো ভেসে আসে ছবিময় শুধু
সে ছবির ক্যানভাসে ভেসে আসে মুখ মণ্ডলী
অর্ধেক কালো তার,অর্ধেক মুখোশেই ঢাকা।
প্রেমের কবিতা কেন লিখিনা প্রশ্ন করেছিলে
লিখেছি অনেক উড়ো চিঠি রোজ যাতায়াতপথে
সে সব চিঠিতে নেই স্বাক্ষর মুঠোছাপ কারও
যে হাত ধরতে গেছি সেই হাত ছেড়ে চলে গেছে ।
মাটি ভেদ করে...
সূর্য, ঘোড়া
বরং এবার আলাদা রাখি সূর্য, ঘোড়ার কথা।
মাটির যে ঢাল তেষ্টা চেনে, আইঢাই খুব–
মরতে গেল জলের কাছে। সূর্য তখন
তেষ্টা দ্যাখে, আচমনে সাজিয়ে রাখে খুরের দায়ভার।
ছুটছে আড়াল, ভাসান প্রখর, ডুবছে কাঁপন,
মন্থনবোধ উঠছে অধীর– দরদাম তার খোলস শুধুই
আনকোরা দাগ রেসের আওয়াজ– সাতটা শরীর স্রোতের
ফাঁকে রশ্মি চাটে, হিসেব রাখে, কখন অনুশাসন ভুলে...
खून की निशानी
मल्लिका सेनगुप्ता
अनुवाद: रेशमी सेन शर्मा
मैंने तो कभी तुमपर हाथ नहीं उठाया,
पहली बार,
जिसदिन तुमने मेरे सीने को चीरकर
खून की निशानियाँ भेंट की थी मुझे,
उसदिन दर्द तो हुआ था ,पर तुमसे कुछ नहीं कहा
शुष्क जमीन पर
न गुलाब खिलता है और न नाचता है मोर l
फिर भी हमेशा से ही...
সেতু
নদীটার নাম টুংটুং
এ নাম তুমি দিয়েছিলে।
লোকাল কোন নামতো নিশ্চিত আছে
অথবা ভৌগোলিক
যা ইচ্ছে হোক এ নদীর নাম টুংটুং।
সালটা মনে নেই। পুজোর একটু আগে
পরিকল্পনাহীন পৌঁছে গেছিলাম পাহাড় দেখব বলে।
নদীতীর ছুঁয়ে আছি চার হাত দিয়ে নদীজল
আমাদের উত্তরমাঠের বিপিনকাকা,পেশায় বাউল,
বলেছিল, নদীজলে পা দিও না
মেয়েমানুষের হৃদয়ের মতো নদী ব্যাথা পায়
তাই দুজনে ছুঁয়ে আছি জল...
সন্দ্বীপের চর
বাবা নেই। মা নেই। শ্মশানের রাত। হেঁটমুণ্ড ছায়াবাহকেরা হরিধ্বনি তুলে মিশে গেল চুল্লির দ্বারে। একটা রাক্ষসী আগুন দুহাত বাড়িয়ে গিলে নিতে চায় চরাচর। কাকজ্যোৎস্নায় শিস দিতে দিতে পিশাচিনী তার পুঁজ-রক্ত-কফ রেখে গেল মাটির মালসায়। আশ্চর্য এ জীবনের কাঁথা-কানি কড়ি ও কোমল। নরম তালুতে রাখা বেলকাঁটার ভাব-ভালোবাসা। পুনর্জন্মের আশা...
বইঘরের উদ্বোধনে, ভোরে
ঠান্ডায় হাড়হিম, সকলের নিঃশ্বাসে কুয়াশা বাড়ছে,
রাস্তায় বইঘরের উদ্বোধনে স্বরচিত জার্মান কবিতা পড়ছেন গিসেলা উইন্টারলিং।
এ হেন হিমাঙ্কের মাঝেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভিড়, সাংবাদিকরা সুদৃশ্য খাতায় তুলে রাখছেন দৃঢ় পঙক্তিগুলি।
রাউএনতালার স্ট্রিট বেয়ে বয়ে যাওয়া গাড়িগুলি থামিয়ে নেমে আসছেন,
ছুটির সকালে, কিছু লোকজন। প্রতিস্পর্ধী ভিড়টা ক্রমেই বেড়ে উঠছে।
কবিতা মধ্যেই করিম ধরলেন...
বাস্তুতন্ত্র
একটা নেড়ি কুত্তা সারাক্ষণ কুঁই কুঁই করছে বুকের ভিতরে
এই বুঝি বেরিয়ে এল প্রকাশ্যে
ভয় পেতে পেতে প্রতিদিন বুকের রক্ত হিম হয়ে আসে
চতুর্দিকে ঘোরা বিড়ালগুলো ল্যাজ ফোলায়,ঘাড় মোটা করে ঘোরে...
একটা বাস্তু দাঁড়াশ ঢুকে আসে ঘরে
দূরে লাফিয়ে পড়ে ব্যাঙ
আর এভাবেই ব্রম্ভময় হয়ে ওঠে জগত..
তোমার ভিতরে পোষা অ্যালসিসিয়ানের ছায়া চমকে দেয় আমাকে!
বিষ
ছোট হতে...
আপোষ
তোমার মুখে মুখোশ পরা— আমার মুখে মুখোশ
একটি চুমুর জন্য না হয় একটু করি আপোষ
একটু ছুঁয়ে তোমার হাত– সাবান জলে ধুই
ভ্যাক্সিন নেয়া প্রেমিক আমি; মন সেলাইয়ের সুঁই
প্রণয়ঘরে
আমি কেবল কান্না করি– যেদিন থেকে তুলো হলে! উড়ছো কেবল, ঘুরছো কেবল হাওয়ায়–হাওয়ায়— তেপান্তরে। বৃষ্টি রাতে পাই না কাছে, কুসুম কলির ঘ্রাণ উবে যায়!...
এভাবেও চলে যাওয়া যায়!
যেভাবে মেলার ভিড়ে পাঁচ বছরের ছেলেকে
কোনও দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে
বাবা দু'মিনিট আসছি বলে নিরুদ্দেশ,
যেভাবে বৌয়ের হাতে সকালের চা খেয়ে
ঘুমন্ত ছেলেমেয়েকে রেখে মর্নিং ওয়াকে গিয়ে
মানুষটা ফেরে না আর,
সেভাবেই আমাদের ফেলে চলে গেলে।
রোদ্দুরে আর অঝোর বৃষ্টিতে
আশ্রয়হীন পথ চলার
প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও দিলে না।
এখন এত রক্তক্ষরণ,এত নিঃশব্দ শ্রাবণ নিয়ে
কী...
লহর
কীভাবে লহর চলে মেঘশঙ্খরোদে!
কীভাবে লহর চলে সম্ভাবনা ছাড়া!
ক্রমশঃ পলির দিকে ম্যাজিক সমূহ...পাখি...
পাখি...
সীমান্ত হাত পেরিয়ে যায়...ঐ যায় হুলুস্বর
হংসধ্বনি গোক্ষুরজল
যায় বেজুবান ও নৃশংস ছুরিকা
তবে এসো,কথা হোক মদিরা-শ্রমণ,
রণকৌশলের ব্যপারে তুমি কী ভেবেছিলে,
কোথায় কোথায় ঘটবে ঘনবসতি বিভ্রম?
করোজ্জ্বল
করোজ্জ্বল ভবচরাচরে তুমি হে কৃপাময় একমাত্র লিবিডো,ভর করেছো সমগ্র গগনমণ্ডলে।
ভূধরে শ্যামা ঘাস তার ফসিল হারালো, বীর্য হারালো...
দিনলিপি
প্রথম প্রেমের মতো শরীরের আড়ভাঙা গূঢ় কামনার
অস্ফুট রোমাঞ্চ নিয়ে আলো ফোটে স্বপ্ন ফিকে হলে।
অতঃপর দিন কাটে মোহে ও বিস্তারে,
দিন কাটে একটানা একঘেয়ে দীর্ঘ বিনোদনে—
আরও বেশি অধুনার অবরুদ্ধ এইসব দিন—
পূত শুভ্র কিশোরী কুসুম তার বৃন্তের দৃঢ়তা
হারিয়ে যৌতুক পায় সংসারশোভন ভালোবাসা।
তুমি স্থায়ী, তুমিই সঞ্চারী।
তোমারই মহিমে গড়া শুদ্ধ এই পরাক্রান্ত রীতি।
নিভৃত রক্তের...
চিলের সঙ্গে কথা
চিলের ঠোঁটের ভাষায় তুমি বলেছিলে--,
এমন কন্ঠ দাও যাতে সুর নেই
এমন মধ্যাহ্ন রেখে যাও,
যাকে রাত বলে ডাকা যাবে ।
এরপর আমি কীট হয়ে পৃথিবীতে আসি
পতঙ্গপুরাণ খুলে রাত জাগি
সে কন্ঠ ও মধ্যাহ্নের প্রতীক্ষায়।
পাতালের পদাবলী খুলে বসে থাকি
স্বাধীন পাদুকার প্রতীক্ষায়...,
পুরাণকে চিঠি লিখি, বলি--
আরো পতঙ্গ দাও, আরো ঠোঁট দাও ।
এখন মনে হয়,
তুমি...
নাবিক জলের গাথা
১
প্রাচীন নাবিক তুমি, তারও চেয়ে প্রাচীন এই যান
সময় সায়াহ্ন কাল।একটি রমণী বর্শা চিরে দিল
মাছের ওই পুংকেশর ঝাঁক।
২
সেই পাপ আদিপাপ
লাগলো এসে জলের সংসারে
জলের বিরুদ্ধভাব চাকার ঐ জটিল ঘূর্ণনে।
৩
মাঝখানে টুকরো ডেক
মেঘমনা নাবিকের ঘর
মাস্তুলের চেয়েও দীর্ঘ
তার ভাঙা ছায়ার বহর।
৪
অ্যালবাট্রস উড়া দিলে
তুমি বলো, হেমিংওয়ে
আমি কি পাব না জলে পূণ্য কড়িকাঠ!
কোর্ট চত্বর
সাদা...
ভ্রমণ
তা হলে এমনই সন্ধ্যা লেখা ছিল বনের ভেতর
ছায়া নেমে আসে জলের মন্দির থেকে
সে ছায়ার হাত ধরে আমার ভ্রমণ শুরু হয়, এক জরায়ুর থেকে আরেক জরায়ু
মাঝখানে পাতা কাঁপে, ঝরে পড়ে দু-এক ফোঁটা জলের শরীর
সেক্সটনের মেয়ে
ভাঙাচোরা স্তনের ভেতর থেকে ভেসে আসছে এপ্রিলের আলো
একটি ক্যাথিড্রাল, পাখির ঠোঁটের মতো চূড়া
রোদ্দুর পড়েছে। তার ছায়ায়...
“in the silence behind what can be heard lies the answers we have been saerching for so long’’
Andreas fransson
একটা পোকার ভোঁ ভোঁ আওয়াজ অনেকক্ষণ মাথার মধ্যে বাজছিল।
খুব সহজেই ওকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেতে পারতাম আমি।হয়ত,সেটাই ও চেয়েছিল।
গরমের দিন সন্ধেবেলায় আশ্চর্য হাওয়াটার জন্য অথবা অন্য কোনও কারণে,জানি...
দেশভাগ
সম্পত্তিটুকু ভাগ হল
একদিকে হাঁড়িপাতিল, রঙিন মাছের আঁশটে
গড়িয়ে পড়া জল নুনের ভাড় হেঁসেলের ধোঁয়া,
অন্যদিকে স্মৃতিজ্বলা মুখ ও হৃদয়ের বিভূতি
শ্যামবর্ণ ধূসর চৌকাঠ আর নরোম জ্যোৎস্না।
কিছু আত্মকেন্দ্রিক মানুষ
অনতিক্রম্য মাতাল হাওয়া বন্ধক
রাখে চণ্ডাল বিচারকের দুই হাতে।
এইভাবে চুরমার ভস্মছাই হয়
পুতুল সংসার, নির্মাণের হাতিয়ার
ভেঙে পড়ে আর্তচিৎকারে;
সম্পত্তিটুকু তখনো দূরে দাঁড়িয়ে
গোপন মুদ্রায় জাগে এক
অনভিপ্রেত সকাল! কান্নার দাগ...
বিকাশ দাশজন্ম ১৯৬৬ সালের পুরুলিয়া জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মানভূম ভাষা নিয়ে গবেষণা করছেন। কয়েকটি সংকলন-গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। জীবিকা শিক্ষকতা।ধানক্ষেতে ঢুলছে খামারকিছু কিছু ঘুম চেয়ারে বসে পা দোলাচ্ছে ক্লান্তিরা ধান রুইছে নির্মাণেরআকাশ করুণা ঢালছে নিরন্তরআর মাথার উপর উড়ে যাচ্ছে লক্ষ পৃথিবী ।মেঘেদের সঙ্গম দেখে জলপাই রঙের...
আবির্ভাব ভট্টাচার্য
জন্ম ১৯৯৩, বর্ধমান। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে সেখানেই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। কবিতার বই রয়েছে দু'টি।
টুকরো টুকরো স্যানিটোরিয়াম
১
রক্তপাত হয়
এখানে বিকেলবেলায় পশ্চিম আকাশে
দেয়ালের গায়ে গায়ে বিয়োগের দাগ
আত্মজৈবনিক
ক্ষয় জেগে থাকে।
২
আমার পাশের বিছানায়
যে ছেলেটি আছে
প্রায় দেখি মধ্যরাতে জেগে বসে থাকে!
আমাকে সে গোপনে বলেছে
তার মন, ইতিহাসে নয়
শিক্ষিকার ভ্রমর কাজলে!...
৩
ইস্কুল বিকেল মনে...