কাহিনিতে একটা বোঁচা ছেলে এসে বসেছে।
আমি তার নাক লম্বা করার চেষ্টায় রয়েছি।
চেষ্টা করেই চলেছি,চেষ্টা।
সারারাত চেষ্টা চললো।একটুও সফল হই নি!
আকাশে তারারা ফুটলো।
জীবন জীবনের চেয়ে বেশি ছুটলো।
প্রেম প্রেমের চেয়ে বেশি।
সকাল হল।আমি বিদায় নেবো এবার।
বোঁচা কাঁদছে।
আমি এবার তাকে বললাম,কেঁদো না,কিছু সীমা মানুষের থাকেই।
এই যেমন আমার।তোমায় কিছুতেই প্রেমিক ভাবতে পারিনি।
আসলে আমরা সবাই বোঁচা।শরীরের...
নিজের শর্তে কলার তুলে বাঁচার মধ্যে
একটা অদৃশ্য ডুয়েল থাকে
পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রির গনগনে খিদে নিয়ে
কুড়িতলার হাসিখুশি নির্মাণ করে যারা
তারাও তো জীবনকে দুয়ো দেয়
আমি তো স্বপ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
ব্যাস সূর্যকে চাঁদ ধরে নিচ্ছি
একুশের চন্দ্রদোষ রাশিচক্র বরাবর সব অঙ্ক ঘেঁটে দেয়
ওহে হাইহিল মেবলিন দুহিতা
পকেটে হিমালয় নিয়ে জন্মানো তোমার দিব্বি
দু-চোখে লোডশেডিং হলে আমিও মগ্ন মৈনাক
দুপুর...
হাসপাতালের ডিউটি সেরে যে ডাক্তার
নিজের চেম্বারে বিনে পয়সায় রোগী দেখে
ওষুধ কোম্পানি থেকে পাওয়া স্যাম্পেল দেয়
দুস্থ রোগীকে
আমি তাকে স্যালুট করি।
গ্রামীণ হেলথ সেন্টারের যে ডাক্তার
তার ডাক্তার সুলভ ভ্যানিটি বাদ দিয়ে
তার ডাক্তার সুলভ গ্র্যাভিটিকে তোয়াক্কা না করে
ইনফ্রাস্টাকচারের বাহানা না দিয়ে
উন্নত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির দোহাই না দেখিয়ে
বাবলা গাছে স্যালাইন ঝুলিয়ে চিকিৎসা করে
আমি তাকে...
ফিরে আসা মানে পুরোপুরি আসা নয়
একবার চলে যাওয়া মানে যেতে থাকা
চোখে রাখা থাকে অশ্রুর সঞ্চয়
জেনো, কিছু কিছু নদীদেরও আছে শাখা
কেন যে অতল... কেন যে শ্রাবণমাস...
এত স্রোত, এত সন্দেহ, চোরাবালি
ভালোবাসা মানে হৃদয়ের সন্ত্রাস
অক্ষরে ব্যথা অনুবাদ করে গালিব
খুন হয়ে যাওয়া ছায়াটার পাশে তবু
আলগোছে পড়ে থাকে শরীরের ঋণ
প্রেমিকের পায়ে মাথা নত কোরো,...
ব্যর্থতা বড়র দায়, শিশু কি
কখনও ব্যর্থ হয়
হামাগুড়ি দিতে দিতে উঠে দাঁড়ানোর
চেষ্টা
সেও এক এভারেস্ট জয়
আমি সেই জয়ের পতাকা
কুরুক্ষেত্রে নিয়ে গেলে মাটি থেকে
উঠে আসে চাকা
যুবতী মায়ের স্তনে
কানীন পুত্রের জিভ
বলে ওঠে,শেষ নয়,যুদ্ধ শেষ নয়।
দু পাত্র ঘিয়ের মধ্যে ঢেলেছো আগুন,
দাউদাউ ফূর্তি হলো রাত থেকে ভোর,
হোমে কিংবা যজ্ঞে ভেবে তুমি হেসে খুন;
ভোরবেলা বাগানে ঢোকে দুই ফুলচোর!
হাতের ছোঁয়ায় তারা ভরে তোলে সাজি,
তুমি দেখে নিদ্রা যাও, আমি গাঁথি মালা,
বিগ্রহ কালো রঙের এবং মেজাজি,
ঘিয়ের শিশির পাশে নৈবেদ্যর থালা৷
ঘুম ভেঙে হঠাৎ তুমি হাত দিলে ওটায়,
আগুনও দাউদাউ জ্বলে ঘিয়ের...
বিনোদিনী
১
এ চাওয়া আমার আসতনা যদি আমাদের প্রেমটা পূর্ণতা পেত। না পাওয়ার একটা মায়া আছে আলাদা, যেটা কাটানো কঠিন। এরকম একটা বৃষ্টির সন্ধেবেলার জন্যে যেগুলো তোলা থাকে...
২
আমাদের কোনোদিন দেখা হবেনা একান্তে। কিন্তু যদি হতো ! ভাবতে ভাবতে মাথার ক্লিপটা আমি খুলে চুলটা উড়িয়ে দিলাম হাওয়ায়। আমরা একসাথে ভিজতাম না, ভিজলে...
ছোটদের ছবি
ওর ছোটবেলাকার কোনও ছবি নেই
ছোটবেলা নেই?
না না, ছবি নেই
ছোটবেলাটা কি ছবির মতো নয়?
সে আর ক'জনেরই বা হয়!
তা বলে ছবি থাকবে না?
হয়তো ক্যামেরা ছিল না
সেই সব দিনে
কটা বাড়ি ছবি তুলত ক্যামেরা কিনে?
স্কুল নেই? বিয়ে বাড়ি? আত্মীয়স্বজন?
পুজো বা জন্মদিন? খাওয়া? আয়োজন?
বান্ধববর্জিত নাকি! ছিল না এসবের প্রয়োজন?
প্রয়োজন না থেকে কারও পারে!
হয়তো...
আজকাল সহবত শিখছি
১
যে সমস্ত শূন্যতাকে নিজের বলে দাবি করতাম, নিতান্তই আবেগ... আয়নার দিকে তাকালে বলিরেখা বাড়ে। সময়ের কোলে পরপর যুক্তাক্ষর।
হেঁটে চলি
শরীরে সহজপাচ্য রোদ্দুর
এরপর আয়ুযোগ হলে, ধরাকে সরা জ্ঞান করবো। চেসবোর্ডে লিখে ফেলবো সূর্যগ্রহণের নিরক্ষর কারণ।
২
সরে যায় কর্কটক্রান্তি দাগ, চেনা সংসার, ছক বাঁধা বিকেল। টুকরো অনুঘটক নিয়ে কেউ বেঁচে ফেরে,...
বেদনা, পরমসত্য তীরে এসে ডুবে যাবে তরী
বেদনা, পরমসত্য এর উপর আর কথা নেই
বেদনা, পরমসত্য পথে চলবে,
সে তোমার সাথে চলবে না
অথচ আরোগ্য সে-ই, দূরে বসে একমাত্র সে-ই পরিত্রাণ
বেদনা তাকেই পালটা দোষ দাও,
যত ভুল একমাত্র তার
সেও তো তোমায় চেনে, সেও জানে পাতা উলটে
পরে চলে যাওয়া
বেদনা পরমসত্য, এর কোনও শেষ নেই বলতে...
যথা-রীতি
তোমাকে সোহাগ করব, সাবধানে, কবিতা যেমন
গোড়ায় কোমল ছন্দ, উদ্দাম মাত্রার ধাক্কা শেষে—
শব্দেরও শিরদাঁড়া-ভাঙা,বাঁকা-লিঙ্গ,ছিঁড়ে-নেওয়া-স্তন...
চুমু-শেষে ধাপে-ধাপে অর্গ্যাজমও,আবেশে আশ্লেষে—
ভালোবাসতে এসে দেখি চতুর্দিকে সংবাদমাধ্যম:
হেডলাইনস্ মুহূর্তে সরে ক্রাইমের বৈচিত্র্য শানিয়ে...
কোথাও পূর্বরাগ নেই,কবি সেজে ডেস্কে ব’সে যম...
আদর করছি পরস্পরকে, মুখে মুখে, বানিয়ে বানিয়ে
লাভ-লাইন
দরজা-কপাট ঝপাট খোলা, ঢুকলাম এই—
শরীরভাঙা পাল্লা-গরাদ; আয়, চলে আয়
বাতাস-বাধাও হাপিশ হল হর্ষ পেয়েই—
ঘি...
১
যা হচ্ছে তা হোক
যা হচ্ছে না তা হওয়ার বৃত্ত থেকে
খুলে খুলে পড়ছে শব্দ
মিথ্যের সত্যিরা লুকিয়ে থাকে ডানায়
সত্যির মিথ্যের জেগে থাকে বুকে....
কিছু জটিল শিরশিরানি
মানুষকে বাঁচতে দিচ্ছে গুটিপোকার মতো...
একটা দুটো সত্যি
আকস্মিক ভাগ্যের মুখে থুবড়ে পড়ে হাসে...
কান্নার এক আলোকিত জোর আছে বুকে
এখানে লুডোতে সাপ আর সাপ
সাপের শরীর ধরে মন্ত্র শিখেছি বলে
এখন আমাকে...
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে
শুরু হয়
তার গতিপথ নিয়ে চর্চা
গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা
ডিঙি-নৌকার অভিমুখ
ঘুরিয়ে নেয় উপকূলের দিকে
অন্ধকারে ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের দিকে চেয়ে
রাত জেগে বসে থাকে
তাদের গৃহিণীরা
আর বিড়বিড় করে জপতে থাকে দুর্গা নাম
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে
দায়িত্বশীল প্রশাসন
মাইকে নির্দেশ দেন
উপকূল খালি করার
ঝড়ের পূর্বাভাসে
নিরীহ পাখিরা
অসহায় নাগরিকের মতো
পালকের নীচে ঠোঁট গুঁজে দিয়ে
অপেক্ষা করে সর্বনাশের
তারপর ঝড় থামে যখন
সকলে মাথা...
ভালোবাসা যায় কিনা, ভালোবাসা থাকে কি, জানি না
স্মৃতির পুরোনো খামে গ্রহণের রেণু লেগে আছে
জুড়িয়েছে চোখ আর মাটি পুড়ে গেছে খোলা পায়ে
কীভাবে কাউকে, বলো, এতখানি ভালোবাসা যায়?
চোখের সামনে থেকে না-দেখার ভান করে দেখি
চোখের আড়াল হলে সে দৃশ্য সহ্য হয় না
বলি তো অনেক কথা, না-বলাটুকুই বেশি বলি
চলি ভাঙা-ভাঙা পথে, পথে পথে...
পোড়া রুটি ও কয়েকটি কবিতা
দ্বিতীয় ঢেউ
ভালো লাগছে না বলতে নেই
বলো লড়াই-ই জীবন
মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে অস্বীকার করার
শক্তিকে বাঁচিয়ে রাখাটাই চিয়ার্স
বাকি সবকিছু আবর্জনা
টান মেরে ছুঁড়ে ফেলো
হাসো,লুটোপুটি খাও
কোনো নিউজ চ্যানেলের দিকে তাকিও না
বরং নিজেই একটা নিউজ হয়ে যাও
অদৃশ্য বিভীষিকাকে ছেয়ে ফেলুক আমাদের
অট্টহাসি...
এই প্রথম গোটা একখানা মহামারির
ময়না তদন্তের রিপোর্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে
মানুষের হাতে...
জীবনের গান
প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সমস্ত আশ্চর্য রাস্তাগুলো লুকিয়ে আছে
পৃথিবীর বুকে জর্জ বিশ্বাসের গানকে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘ করছে আয়ু রেখা
ছেঁড়াতার বেঁধে ফেলতেও চান কেউ কেউ
কিন্তু,
ওই যে মন আর মস্তিষ্কের 'ম' আলাদা
তাই, যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো
তাকে বলো না কখনও, 'ভালোবাসি!'
অভিসম্পাত
শব্দের সঙ্গে বহুকাল সম্পর্ক না থাকলে দূরত্ব বাড়ে
ভেতর ভেতর ভয় তাড়া করে
যদি কোনও...
রাশিয়া আমার স্বপ্নের দেশ
ছোটোবেলা থেকে ওর সঙ্গে আমার পরিচয়।
সোভিয়েত দেশ চিনিয়েছিল নিজেকে
চিনিয়েছিল আরও অনেককে।
বিস্ফারিত চোখে ম্যাপে দেখতাম ওর বেড়ে ওঠা শরীর
উজবেকিস্তান, কাজিকিস্তান, লাতভিয়া,
এস্তোনিয়া, বেলারুশ, ইউক্রেন আরও আরও.....
গান্ধারীর সন্তান ছিল রাশিয়া।
বড় হয়ে দেখলাম--
বড় বিষণ্ণ আর ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়া।
যা চোখে দেখা যায় না, যা কানে শোনা যায়
তা শুধু কান্না ও হাহাকার।
এ...
ভষ্মমাখা আমাদের আশ্রয়
১
ঘর বলতে সামান্য এই সন্তানহীন বৃক্ষের মতো পায়ের পাতার কাছে জমে থাকা শূন্যতাটুকু। শেষ রাত্রির গূঢ় অনুশোচনার মতো আজ স্তবকের পর স্তবক ভেঙে রক্ত গড়িয়ে গেল। বিষও উঠে এল কিছু। সান্ধ্য ভ্রমণের বোধহীন চিহ্নগুলি খুলে রেখেছে এক একটি স্পর্শের মতো অজানা সংলাপ। আমার জামা ছিঁড়ে গিয়ে বুকের...
জাংশানে খুঁজি রোজ গজমতি মালা
প্রেমের ঘোড়ার সাজ চেতকের মতো
ছাই মেখে বসে আছে সাগর মেলায়
ভগীরথ এনে দেবে পয়োমন্ত জল
অপেক্ষা ফিরে যায় মুখ ভার করে
টেবিলে ডুকরে কাঁদে বেলিফুল সুগন্ধি রুমাল
মাছের পেটের খাঁজে রাজার আংটি খুঁজি আমি
বিদূষক কৌতুকে হিসেবের বিল দিয়ে যায়
গজমতি মালা হায় কখন পরাবে প্রিয়তমা
জরুরি বিভাগ বলে হাতে বড় অল্প...
এখানে অন্যমনস্কতা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে
আমার ভিতর
এক ছোপ অন্ধকার এসে পড়েছে মেঝেতে। আরও অন্য ঋতু অন্যতর বেলা অব্দি বিছিয়ে আছে অবসান। অবসানের মধ্যে দানীভর্তি ফুল। পাতাগুলি আমায় বললো, যে কাতরতা সাদার ভিতর থেকে সুগন্ধ তুলে আনে – তা তোমার গো সবটাই তোমার
আমার বুকের মধ্যে ঢুলে আসে প্রকাণ্ড এক চোখ,...