প্রাচীন গুম্ফা থেকে ভেসে আসে মেঘ যেন বহুদূরের বারান্দা থেকে তুমি হেঁটে এলে ধীরে অর্কিড-উপত্যকায় সন্ধে নামছে এখন , ঘন হয়ে উঠছে ধোঁয়াকুয়াশার মরসুম আমার আর কিছু পাবার নেই, কিছু হারাবার নেই পাইনবনের পথে ওই দ্যাখো হাতে হাত আমাদের ছায়া বাচ্চা লামারা ফুটবল খেলছে কিছুদূরে আমি কোনদিকে যাবো বুঝতে না পেরে শেষমেষ খাদের দিকেই চলে যাই এতো...
যেখানে সেখানে মরব না আমি। যেমন তেমন করেও নয়। অনেক আর্তি, অনেক কাতর ভিক্ষা, বহু আনত জ্যোৎস্না মাড়িয়ে, এতৎকালের জমানো সব পুত্তলিকাপ্রবাহ; দু হাতের নখে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলব শ্মশানচারী শৃগালের মত। যত পলাতক পরীদের দল, আর রক্ষে থাকবে না হাহাকারে। যত আমন্ত্রণ, যত নিহত শিশু পঙ্গপাল সব সব ছত্রভঙ্গ হবে - দানব হুঙ্কারে। হে ক্ষত্রদেবতা,...
পৃথিবীর সেরা বেহালা বাদক জসুয়া বেল ওয়াশিংটনের সাবওয়ে স্টেশনে ঘন্টাখানেক বেহালা বাজালেন সাতজন শ্রোতার সামনে । তারমধ্যে একজনের বয়স তিন একজন মাত্র চিনতে পেরেছিলেন তাঁকে। হুগলির ওভারব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে কবিতা পড়েছিলেন একজন। যেখানে শ্রোতার সংখ্যা ছয় একজনের বয়স নয় কেউ চিনলো না তাকে কোনো কমেন্ট কোনো শেয়ার কোনো লাইক থাকল না শুধু দুন আর শতাব্দী এক্সপ্রেস শব্দ করে চলে গেল দুদিকে উড়তে...
কার দিকে চোখ? কোথায় তোমার মাথা? কার আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে আছে? অমন ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ভ্রমরও তো যায় না অতো কাছে! মুখ লুকিয়ে কীসের অত হাসি? সারাটাদিন কীসের এত মেসেজ? নদীর জলও আয়না মুছে ফেলে সে-ই বা কেন এমন দাঁড়ায় এসে? এতটা ছাড় দিয়েছ কেন তুমি? বন্ধু শুধু? বন্ধু কেমন জানি ওর দেওয়া বই বুকের কাছে রাখো আমি তো...
জানো, ভিক্ষুক এই তিনদিন আকাশ হয়েছে, প্রভু সিন্নির পাত্রে মিশিয়ে খেয়েছে অনেক মায়া-প্রবন্ধ--- জানে জনে-জনে… বিদ্বান হল দেহ-মন তাই! প্রতিটি পাতায় সংকেত পাই রোদ ওঠে রোদ পড়ে যায় জলে সন্ধ্যা আসেন, প্রবন্ধ বলে: ‘আমার মধ্যে প্রতিষ্ঠা কর’ যত নারীস্রোত, ততদূর নর প্রবন্ধকার তুলসি-মালিকা আমি আশ্রিত, তিনিই চালিকা তবু ভিক্ষুক অসম সাহসী কাঁধে টিয়া পাখি, ডাকনাম: শশী তিনদিন ধরে ওরা খড়কুটো আগলে রেখেছে ঝড়ের উঠোন বাকি...
আমি আজ বড়ই একা প্রকৃতির কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছি ফুলের ঘ্রাণে মাতাল করেছে আমার মনন বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে বুকের ওড়না তারপর? এক কাপ চা খেয়ে যা শান্তি পাই তোমাদের আপ্যায়নে তা পাই না হাজারো অভিযোগ মেনে নিয়েও যখন ভালোবাসি ভুলে যাই পূর্বের সকল কথোপকথন তারপর? কৃষ্ণচূড়া ফুল দিয়ে পথ ঢেকেছি, হাঁটছি না দাঁড়িয়ে আছি, অপেক্ষায় আছি ঢেউ এসে...
তোমাকে দুঃখবোধে ডুবিয়ে রাখতে চাইনি। দোষ আমার! একের পর এক যে তীর আমি মেরেছি, তা এমন নির্মম হয়ে ফিরবে ভাবিনি। তুমি বুঝবে না, তোমাকে ছাড়া রাত-দিন কেমন দুর্বিষহ কঠিন ধাঁধার মতো হয়ে উঠছে। পোড়ো বাড়ির গুমোট অন্ধকার যেমন গলা টিপে ধরে পিছন থেকে। আমি হিসেব মেলাতে পারছি না। চাঁদ...
মনে মনে অধীন থাকা সহজ অনায়াসে চরণ ধূলায় লীন ফুলচয়ন, গাগরিভরন সবই কল্পসম্ভব যদি তুমি রাখো। কোথায় রাখবে শ্যামরায়? তোমার দু'পা গলে গেছে ওই পাহাড় বনের ধারে এদিকে বেলা নেমে এলো আমি সাজে বসি শেষ দিনে এসো ছায়ার মত পাশে রেখো যা দেবে তা-ই স্বীকার্য সেদিন, কী পিপাসু এই দাস্যভাব! চোখ গেঁথে রাখলাম মাটিতে যে চোখে জল এলে ভেবো গান-- বৃন্দাবনী সারং
আমার বঁধুয়া নয়, তবু রাত জেগে দেখি তার অমন আনবাড়ি যাওয়া ধুলোনদী পার হয়ে, ডিঙিতে পদ্মের ছাপ রেখে কার কুঞ্জে এত রাত? ভাবি একদিন কাছে ডেকে কপট জিজ্ঞাসা করি, ভালোমানুষের ছেলে, শোনো- চোখের দিঘলে এসে নদীশব্দ পেয়েছ কখনও? সে ঢেউ আমার নয়। ভীষণ এই আনচান দিনে না, গাঙ্গিনি নই আর। জল নেই যমুনাপুলিনে। খরার ভিতরে জ্বলে হু...
হেমন্ত এসব গোধূলি আলো স্বজন হারানো লোভে একা পথেই পায়ের ছাপ তারপাশে লিখে রাখা ঘাতক আলোয় আঁকশি ফেরানো চোখে ফেরা যায়! বলো! দেহ নেই! জন্ম নেই মাতৃহননের সুরে কাকেই বা প্রিয় ডাকি, কাকে যে দেবতা ! এসব গোধূলি আলো একা...   সন্ধ্যা কাকে বল ছায়া? আলোর দরজা পেতে, রোজ সেও হেঁটে গেছে জারুল বাগানে মৃত গাছেদের চোখে ঘৃণা জন্ম নিতে দেখে-- চুপচাপ পুঁতে দেয়...
পিকাসোর ছবি একই পথে সব গল্পেরই শেষ বস্তুত একটাই গল্প মাঠের মাঝে তৈরি হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন। শুধুমাত্র মনে হচ্ছে বদলে যাচ্ছে ; মাঠের চারিদিকে বিভিন্ন উচ্চতার ঘিরে আছে যে বাড়িগুলো সেগুলোর বিভিন্ন ছাদ থেকে কেউ দেখছে কান কেউবা একটা চোখ কেউবা নাকের পাশ অথবা মাথার পেছন তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখের ওপর চোখ ঢাকা পড়ে যাওয়া কান ছাদের গুঞ্জন শোনার জন্য উঠে আসছে আর একটি...
মিলন বারবার দেখা হবে আমাদের নদীর ধারে... পাহাড়ের ঢালে... অথবা গ্রন্থাগারের নীরবতায় এই চরাচর ছেড়ে যাচ্ছ যাও— তবে মোহনায় যেও না ওখানে নবীন পলি রাত্রির কারণ বোঝে না জেনে রাখো অভিমান সফল সন্ন্যাসী কামনাসাগর পাড়ি দিয়ে ছুটে যায় অরণ্যে, মোক্ষ লাভের আশায় চিন্তা হয়... যদি পথ হারিয়ে ফেলো প্যাডক গাছের ছায়ায় নাভি ভরা তেজ পথে উগরে দিয়ে, জলপাত্র উজাড় করে ফিরে এসো দেখা হোক আমাদের নাগরদোলায়, দেখা...
সন্ধ্যা তারা পথে পথে জল দুরূহ বেদনা! পথে পথে বেজে যায় গান ক্ষমার মতন অদূরে গোলাপ ভাঙা পাপড়ির শোকে লেখাটি বিহ্বল! বিকেলে পথিক নামে সন্ধ্যার জটলা একা একা তারা উঠেছে আকাশে প্রেমিকার মতো। পুজো সেই লেখাটিকে নতুন পোশাক দেব ভাবি যার নাম, পাঠকের মুখে শুনি। প্রেমিক সে আসেনি এসেছে কুয়াশা বেড়াতে চোখের বাড়ি আমি তাই প্রহরী শুধুই আমার ছায়ার! শূন্যতা জানিল শুধু সে কিছুই জানিলনা! শুধু সুর বুকে নিয়ে গান কিছুটা থমকে ফের বেজে যায় সন্ধের মায়ায়... তুলনা নবীন...
জমাটবাঁধা মেঘের ভিতর দিয়ে যখন সংবাদগুলি উড়ে যাচ্ছিল আমি বিদ্যুৎ পেড়ে আনতে একটা লম্বা আঁকশি বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। দেখি,আঁকশি বেয়ে নামছে থিকথিক মাজাভাঙা মানুষ। আমি মার্ক্স পড়িনি। ভরা পেটে তাদের বহুদিন রপ্ত করতে হয়েছে অন্ধ- ভিখিরির পার্ট । বনবিতানের গেটে এখন তারা এনামেলের বাটি নাচাচ্ছে, 'পয়সা দিয়ে হাওয়া কিনব না,কিনব না'। আর মাঙনায় পাওয়া লক্ষ্মীর সরা পেতে দিয়েছে চরাচরে। মুফত পেলে এক কাপ...
মধুদা ডাকছে মধুদা ডাকছে সবাই বলছে, মধুদা ডাকছে মধুদার এরিয়ায় থাকি ঘাড়ে একটাই মাথা কিন্তু ভয় পাব না আর এখন আঙুল তুলতে হবে এখন প্রশ্ন করতে হবে কী হবে এই আবছা স্বাধীনতার দেশে ফালতু বেঁচে থেকে? যেখানে মহাত্মা গান্ধী টাকা হয়ে লুকিয়ে থাকেন বাথরুমের দেওয়ালে? ভয় পাওয়ার কিছু নেই আমরা রাজনীতি করি না রাজনীতি আমাদের করে রাজনীতি উপভোগ করে আমাদের...
এই সেই গলি এইখানে বাঁয়ে বেঁকে কী সরু কী সরু,দুদিকে দোকান গাড়ি ঢোকে না, হাতে হাতে ধরে… তারপর সেই মুখ, সাধ না মেটা দেখা অঙ্গে বস্ত্র নেই জলস্নান জলস্নান কে? কে? কে? কে খায়নি নুন? মাসি পিসি কাকা জ্যাঠা আত্মীয়কুটুম শুধু মেয়ে বলে সে— মুখে দেবে না আগুন?
ও হাওয়া, আমার মুখ মুছিয়ে দাও এইসব অলৌকিক জানালার ধার, বাড়ি ফেরার ট্রেন ফেরিওয়ালা আপেল নীল চশমার ফ্রেম জীববিষয়ক আগ্রহ বা নদীবিষয়ক দিল ঢুঁন্ডতা হ্যায় ফির ওহী... এ এক আশ্চর্য উড়ান অস্থির মায়াচোখ বা নেহাত নিরাসক্ত ঘরবাড়ি মেঘ মেঘ বিচ্ছেদ বিচ্ছেদ পাখিডানা হুইসল বা অনুরূপ সমবৃত্তীয় অঙ্গ এইসব অনন্ত দ্বিধা ঘাম হয়ে ফুটে থাকে মুছিয়ে দাও... স্টেশন নিকটে এলে বিরহী কদম অকালেই ঝরে...
সাউথ সিটি মল 'তোমার হৃৎপিণ্ড যেন বিনামূল্যে ওয়াই ফাই জোন ফ্রি সিগন্যাল যাবে তাই, সারাক্ষণ ফোনে রাখি চোখ' এই বলে দুজনেই অক্টোপাস খেতে ঢুকে গেল লিরিল যুবতী আর তার সঙ্গে ডেনিম যুবক মনুমেন্ট কলকাতা শুয়ে থাকা, তীব্র এক রাক্ষসের নাম মনুমেন্ট তার উথ্বিত শিশ্ন, ত্বক ভেদ করে ভরা পূর্ণিমার রাতে মাতালেরা যখন ঘুমিয়ে, শিশ্নমুখ চুঁইয়ে রক্ত মাখা গাঢ় বীর্য ঝরে পড়ে ফ্রি স্কুল স্ট্রিট মিসেস ব্রিগান্জা...
একদিন সমস্ত সহজ হবে , জানি। লিখতে লিখতে হবে, সে তো। লেখা এক স্বরাজ রাজধানী। লেখা এক মস্ত বড় সেতু। সেতুবন্ধ করেছি শরীরে। হাত আর পায়ের ভিতরে কাজ আর বিশ্রাম পুরেছি। শিশু হয়ে মাঠে নেমে গেছি। এই ত সফল বিদ্যালাভ। এই ত সজীব প্রতি কোষ। হাত আর পায়ের মিলনে এই ত ভুলেছি আক্রোশ। শরীরকে করেছি মন্দির হাত জুড়ে হয়ে আছি স্থির সমস্ত সহজ...
এসেছ আষাঢ় তাই, কৃষ্ণ সেজে আজ হোলিখেলা   ভিজে যাচ্ছে মাটি আর খুলে যাচ্ছে সব ঘর দোর এতদিন ধুয়ে মুছে যা রেখেছি,   সব শুধু তোর   খসে পড়ছে পলেস্তরা, জেনে গেছে পাড়া প্রতিবেশি নিভৃত ঘরে আজ বসে আছে   দুই সন্নেসী!   এসেছ আষাঢ় তাই, রাই আজ শ্যামসঙ্গ করে, হয়েছে কলঙ্কিনী এইবার বানপ্রস্থে যাবে…   শরীরেই মোক্ষ তার, বৈধব্যে দারুণ অনিহা   রাধা রাধা করে শ্যাম, রাই শুধু...