Home বাংলা কবিতা

বাংলা কবিতা

রাশিয়া আমার স্বপ্নের দেশ ছোটোবেলা থেকে ওর সঙ্গে আমার পরিচয়। সোভিয়েত দেশ চিনিয়েছিল নিজেকে চিনিয়েছিল আরও অনেককে। বিস্ফারিত চোখে ম্যাপে দেখতাম ওর বেড়ে ওঠা শরীর উজবেকিস্তান, কাজিকিস্তান, লাতভিয়া, এস্তোনিয়া, বেলারুশ, ইউক্রেন আরও আরও..... গান্ধারীর সন্তান ছিল রাশিয়া। বড় হয়ে দেখলাম-- বড় বিষণ্ণ আর ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়া। যা চোখে দেখা যায় না, যা কানে শোনা যায় তা শুধু কান্না ও হাহাকার। এ...
দ্যূতসভাস্থল মধ্যে পৌঁছলেন অনিন্দিতরুচি। বয়োবৃদ্ধ, জ্ঞানবৃদ্ধ প্রত্যেকের চোখে চোখ রেখে নিক্ষেপিত হল তার প্রশ্নবাণ-- যিনি নিজে পরাজিত, তার অধিকার ছিল অন্যকে পণ রাখা? এর উত্তর কী, সে তো সকলের জ্ঞাত; ফলাফল সুদূরপ্রসারী; সে কথা বুঝতে এই সভাস্থলে জ্ঞানী-অজ্ঞানী-- অসুবিধা ছিল না কারোরই। তবু সেই নিয়তিতে পাঞ্জাছাপ দিলেন সকলে। আরও এক দ্যূতক্রীড়া শুরু হয়ে গেছে। নীতি-নির্ধারক যারা, আত্মবিক্রয় করে পণ...
পল্লবী মুখোপাধ্যায়জন্ম কল্যাণীতে। বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগ্রামে স্থায়ী ঠিকানা। বাংলায় স্নাতক হওয়ার পর বাংলা ও শিক্ষা বিজ্ঞান উভয় বিষয়ে স্নাতকোত্তর। উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি খুব ছোটবেলা থেকেই  তাঁর লেখালিখির শুরু।  সেইসব দারুণ শৈশব আর কৈশোরের দিনগুলোতে ছোট বোনের সহচর্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  পরবর্তী কালে কলেজ জীবনে আসেন আরো একজন...
হাসপাতালের ডিউটি সেরে যে ডাক্তার নিজের চেম্বারে বিনে পয়সায় রোগী দেখে ওষুধ কোম্পানি থেকে পাওয়া স্যাম্পেল দেয় দুস্থ রোগীকে আমি তাকে স্যালুট করি। গ্রামীণ হেলথ সেন্টারের যে ডাক্তার তার ডাক্তার সুলভ ভ্যানিটি বাদ দিয়ে তার ডাক্তার সুলভ গ্র‍্যাভিটিকে তোয়াক্কা না করে ইনফ্রাস্টাকচারের বাহানা না দিয়ে উন্নত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির দোহাই না দেখিয়ে বাবলা গাছে স্যালাইন ঝুলিয়ে চিকিৎসা করে আমি তাকে...
বৃষ্টি ও চাঁদের মাঝে মোমবাতি জ্বেলে মধ্য জুলাই আমার বুকে শস্যবীজ রেখে গেছে কবে! এমনই অন্ধকারে জলের রং চিনিয়েছিল অস্ফুট ভ্রূণাধার। সোঁদা মাটিতে স্নেহের গন্ধ শুঁকে পৌঁছে গেছি কত অচিন পুকুর— সেখানে সেই হাতের চপলতা নেই, নেই কোনও শ্বাসের প্রলেপ হে জুলাইয়ের জন্মবার আমাকে নিয়ে চলো রোমকূপের বনে! আদিম ঘাস যেখানে লোকাতীত আলোর অপেক্ষায় গর্ভের কলুষহীন মাঠও আরেকবার নিশ্চুপ হতে চায়, হাত ধরে বলে— ‘তৃষ্ণার্ত পারাপার...
প্রায় নারীকণ্ঠে বিলাপের উচ্চতায় উড়ে যাচ্ছে হৃদয়বেদনাবাহী রিক্সার পর রিক্সা। নীচে এই শহরের চাপড়া-চাপড়া ত্বক পড়ে থাকে করুণ মাধ্যাকর্ষণের দিন। নদীর আকাশে এক তীব্র আলোর ছেদ দেখা গেল পাখিদের হৃদয়যন্ত্র লেগে ওই শেষ অস্ত্রোপচার বেতারে ছড়িয়ে পড়ে এইভাবে গান
আমার বঁধুয়া নয়, তবু রাত জেগে দেখি তার অমন আনবাড়ি যাওয়া ধুলোনদী পার হয়ে, ডিঙিতে পদ্মের ছাপ রেখে কার কুঞ্জে এত রাত? ভাবি একদিন কাছে ডেকে কপট জিজ্ঞাসা করি, ভালোমানুষের ছেলে, শোনো- চোখের দিঘলে এসে নদীশব্দ পেয়েছ কখনও? সে ঢেউ আমার নয়। ভীষণ এই আনচান দিনে না, গাঙ্গিনি নই আর। জল নেই যমুনাপুলিনে। খরার ভিতরে জ্বলে হু...
আকাশ থেকে অশ্রু ঝরে কার? লুকিয়ে কেন মেঘের বাড়ি থাকো? এ ভরা বাদর বিরহের কারবার বুকের ভিতর কার ছবি তুমি আঁকো? চিরদিন কানু মন্দিরে মোর বনমালী তুমি ভাগ্যে নেই এ শহর মেঘে ঘনঘটা ঘোর বৃষ্টি মানে বুঝি তোমাকেই যতটুকু আজ দিয়েছি ক্ষত অশ্রুতে সব রেখেছি মেপে নব জলধর বিজুরি যত ফিরে দেখি অতি সংক্ষেপে এ বরষায় তুমি একাই নাব্য রাধিকার চোখে মনখারাপ শুনো...
ফিরে আসা মানে পুরোপুরি আসা নয় একবার চলে যাওয়া মানে যেতে থাকা চোখে রাখা থাকে অশ্রুর সঞ্চয় জেনো, কিছু কিছু নদীদেরও আছে শাখা কেন যে অতল... কেন যে শ্রাবণমাস... এত স্রোত, এত সন্দেহ, চোরাবালি ভালোবাসা মানে হৃদয়ের সন্ত্রাস অক্ষরে ব্যথা অনুবাদ করে গালিব খুন হয়ে যাওয়া ছায়াটার পাশে তবু আলগোছে পড়ে থাকে শরীরের ঋণ প্রেমিকের পায়ে মাথা নত কোরো,...
দুর্গা বেরার (Durga Bera) জন্ম নদীয়া জেলায়। বারাসাতে থাকেন। ছ'টি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। কয়েকটি বইয়ের নাম-- ও নতুন বছর, না বলা কথা, 'ভালবাসি' মুখে বলতে হয় না। বানভাসি সুন্দরী ঘেরা সুন্দরবনে- যারা ঝুঁপড়ি কুঁড়েতে থাকে- ভালো 'বাসা' হীন ওরাই কেবল ভালোবেসে হেসে থাকে। তোমার যাপন রোদেলা আকাশ, ওদের যাপন মেঘলা। ওরাই থাকে আঁধার...
আভা সরকার মণ্ডল (Ava Sarkar Mandal) ভেসে গেলে পাথরের খাঁজে খাঁজে আটকে থাকা মনের কথাগুলো কবে যেন ভাব জমিয়ে ফ্যালে বয়ে চলা চপল স্রোতের সঙ্গে সুখ দুঃখের গল্প করতে করতে তারা ভেসে চলে আনমনে --- চারদিক থেকে অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরলে আকাশের প্রচ্ছদে আষাঢ়ে মেঘ আর জলের বুকে প্রবল ঢেউয়ের দাপাদাপি সম্বিৎ ফেরায় ঠিক তখনই বোঝা যায় একবার ভেসে গেলে উজান ঠেলে তীরে...
বিসর্জনের পর বিষাদের সাথে মদ খেতে যাই                                                                                     ...
ভেবেছিলে ওই পারে শালবন আছে? দীর্ঘ আর ঋজু। তারা কথা বলবে চোখে চোখ রেখে ওই দিকে সুশীতল হাওয়া বয়, নক্ষত্রের ভিড় তোমার নিষ্পত্র শিরে আঁকা হবে জ্যোতির-বলয়? এপার মলিন বড়। আলোহীন রোগা ভালবাসা মাঝারি মাপের, তাই মিহি অজুহাতে ছিঁড়ে ফেলে স্নেহ-রজ্জু, গা থেকে খসিয়ে ফেলে প্রত্নপরিচয় হেঁটে যাচ্ছ ওই পারে, যাও... ওপারে এখন একা, দীর্ঘতর ছায়া পড়ে...
বালক বয়সে গিঁট খুলতে পারিনি বলে তোমার তীর্থস্থানটি দেখা হয়নি আমার। তারপর গোয়ালন্দ স্টিমারঘাট পেরিয়ে উইপোকার মতো অচেনা দেশের মাটি দিয়ে ঘর বানিয়েছি আমরা ক'জন। ভাগ্যিস তোমার তোমাকে ছাড়া আর কিছু দেখিনি সেদিন তাই শুধু অপরূপ মুখশ্রী নিয়ে আজও তুমি বেঁচে আছো স্রোতস্বিনী কর্ণফুলি হয়ে। তারপর দিন গেছে মন্বন্তরে রাত্রি গেছে বেহুলা-ভেলায়। নিষিদ্ধ মাংসের লোভে কতবার চরিত্র দূষিত হয়ে...
সুব্রত দেবনাথ (Subrata Debnath) ফ্রেম একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে আমার চোখ বাঁধা ফ্রেমের বাইরে চোখ নিতে পারি না চেষ্টা করলে হয়তো পারতাম, কিন্তু সে চেষ্টায় ব্যর্থ । জন্ম থেকেই এই ফ্রেমে বন্দি আমার আর্টিস্ট এভাবেই আমাকে গড়েছে । যতবার ফ্রেমের বাইরে তাকাবার চেষ্টা করেছি পাশের ফ্রেম থেকে আওয়াজ এসেছে ধমকের সুরে ! আর সাহস হয়নি। দেখেছি ফ্রেমের বাইরে যারা তাকাবার দুঃসাহস...
অহনা ঘোষবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা। প্রাণীবিদ্যায় স্নাতক এবং স্নায়ুবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তরের হবার পর এখন গবেষণারত। প্রকাশিত হয়েছে বিতার বই এবং একটি ইংরেজি উপন্যাস।মৃত্যুঞ্জয়ীতোমার জন্য কষ্টে আছি দেশ,পাহাড় ভাঙা ধোঁয়া কুণ্ডলী ওঠে,ডায়নামাইটে বহমানতার রেশ,কাশ্মীর বাঁচে রাইফেলে, আখরোটে।তোমার জন্য কষ্টে আছি দেশ,সাদা পায়রার বিক্ষত দেহ লাল,উপদ্বীপ জুড়ে অ-সুখের সন্দেশ,ক্ষুদার্ত পেট, মহার্ঘ্য ভাত-ডাল।তোমার জন্য...
এখন আর কিছুই পড়ে নেই পোড়া বসন্ত সারারাত স্মৃতিহীন অতীতের কথা বলার চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না দেওয়ালে তার পিঠ ঠেকে গেছে ! বুকের ভিতরে বাতাস ছিল এখন সে বাতাস অন্ধকার শীতলতম হিম! তোমার সঙ্গেও আর দেখা হবে না কোনওদিন লাস্য হারাতে হারাতে তুমি আজ লাশ হয়ে গেছ!
মৌমিতা পাল ততোধিকডুবতে পারিনি।হারাতে পারি না।ঘুমিয়ে জাগার চেয়ে কষ্টকর কিছু নেই।শেষ না করে আরম্ভ করার মধ্যে বঞ্চনাযেহেতু, আমি জানি ব্যাধির বীজে মসৃণ ভেনাস।শরীরে মেঘনার গান নিয়ে মেরুচূড়ারা জনহীন।যদি তুমি মানো, তবে রেশমী আড়াল,পর্দায় ঢাকা বাড়ি, আরধনুকের বিস্তীর্ণ সংক্রমণেপ্রজাপতির বিভ্রমণ।যদিও বিনিদ্র দিনরাত ঘোরে।(শরীরে ঘনিষ্ঠ রূপসীর বিপরীত মায়া নিয়ে প্রেম জ্বালিয়ে ছিল...
ভালোবাসা যায় কিনা, ভালোবাসা থাকে কি, জানি না স্মৃতির পুরোনো খামে গ্রহণের রেণু লেগে আছে জুড়িয়েছে চোখ আর মাটি পুড়ে গেছে খোলা পায়ে কীভাবে কাউকে, বলো, এতখানি ভালোবাসা যায়? চোখের সামনে থেকে না-দেখার ভান করে দেখি চোখের আড়াল হলে সে দৃশ্য সহ্য হয় না বলি তো অনেক কথা, না-বলাটুকুই বেশি বলি চলি ভাঙা-ভাঙা পথে, পথে পথে...
“in the silence behind what can be heard lies the answers we have been saerching for so long’’ Andreas fransson একটা পোকার ভোঁ ভোঁ আওয়াজ অনেকক্ষণ মাথার মধ্যে বাজছিল। খুব সহজেই ওকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেতে পারতাম আমি।হয়ত,সেটাই ও চেয়েছিল। গরমের দিন সন্ধেবেলায় আশ্চর্য হাওয়াটার জন্য অথবা অন্য কোনও কারণে,জানি...